ভালো ছাত্র হওয়ার উপায়

ভালো ছাত্র হওয়ার প্রধান  কৌশল ৫ টি 

১। ক্লাসে নিয়মিত হওয়া ।

২। চরিত্রবান হওয়া ।

৩। মনোযোগী  হওয়া ।

৪। যা পরবে তাই লিখবে ।

৫। আত্মবিশ্বাসী হওয়া ।



১। ক্লাসে নিয়মিত হওয়া ।

কবি এইচ বাকী  লিখেছেন :- যদি ঘষো সব সময় ,তবে হবে লৌহ ক্ষয় ।

কবি বোঝাতে চেয়েছেন , লোহা যতই শক্ত হউক না কেন প্রতিদিন ঘষতে ঘষতে  সেটা একদিন ক্ষয় হয়ে যায় । তুমিও যতই দুর্বল ছাত্র হও না কেন প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকলে তোমার দুর্বলতা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। তুমি  একদিন ভালো ছাত্রের খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হবে।

আবার প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকাটা কিন্তু  সহজ নয়।  কারণ ক্লাসে থাকতে হলে ক্লাসের পড়া রেডি করতে হবে। অন্যথায় শাস্তি তো মাপ নাই। হ্যা বন্ধু শাস্তি মেনে হবে। তুমি শুনলে হয়তো আনন্দিত হবে। স্যার যে ছাত্রকে শাস্তি দেয় , স্যার সেই ছাত্রকে অত্যন্ত ভালোবাসে এবং তার জন্য দোয়া করে। যত কষ্ট হউক, যতই খারাপ লাগুক প্রতিদিন তোমাকে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। খেয়াল রাখবে, ক্লাসে প্রতিদিন উপস্তিত না থাকলে ভালো ছাত্র ক্রমেই দুর্বল হয়।


২। চরিত্রবান হওয়া ।

জনৈক দারশনিক বলেছেনঃ- "Money is lost nothing is lost. Health is lost something is lost, but the character is lost everything is lost".

অর্থাৎ অর্থ নষ্ট হলে তেমন কোন ক্ষতি নাই, স্বাস্থ্য নষ্ট হলে সামান্য ক্ষতি হয়  কিন্ত চরিত্র ক্ষতি হলে সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত ।

চরিত্রবান ছাত্রের বৈশিষ্ট্য 

১। সত্য কথা বলা। 

২। নম্র ও ভিদ্র হওয়া ।

৩। বিনয়ী হওয়া ।

৪। সৎ ও আদর্শবান হওয়া ।

৫। শিষ্টাচারী হওয়া ।

৬। ছোটদের স্নেহ করা ।

৭। বড়দের সম্মান করা ।

৮। ওস্তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করা ।

৯। আব্বা আম্মার সাথে ভাল ব্যবহার করা।

১০। সুমিষ্ট ভাষী হওয়া ।

১১। ধার্মিক হওয়া।

সর্বোপরি অন্যায় , অত্যাচার , দুর্নীতি , কদাচার, সুদ, ঘুষ, ব্যবহার , ছিনতাই, ধর্ষণ, রাহাজানি, নারীলোভী, নেশা, গীবদ, খুন-খারাবি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা সৎচরিত্র বানের বৈশিষ্ট্য ।


৩। মনোযোগী  হওয়া ।

নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মনযোগী হতে হবে ঃ-

১। ক্লাসে মন দিয়ে সারের কথা শুনতে হবে ।

২। পড়ার সময় একমুখী হয়ে সব চিন্তা ভাবনা ভুলে দিয়ে এক্কগ্রচিত্তে পড়ার চেষ্টা করতে হবে।

৪। লেখার সময় ধীর স্তিরভাবে ধৈর্যের সাথে সুন্দর করে লিখতে হবে।


৪। যা পরবে তাই লিখবে ।

লিখলে একসাথে দুইটি কাজ হয়  (ক)  পড়া রিভাইজ হয়। (খ) লেখা সুন্দর হয়।

এজন্য যা পড়বে তাই সাথে সাথে লিখবে। লেখার পর বানান চেক করবে। বানান ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে শুদ্ধ করে তা মনের মধ্যে গেঁথে নিবে। স্বরণ রাখবে লেখার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করবেনা, বিরক্ত হবে না বরং ধৈর্যের পরিচয় দিবে।

পড়তে পারলে পণ্ডিত হতে পারবে  কন্তু লিখতে না পারলে রেজাল্ট ভাল হবে না। পরীক্ষক চান সুন্দর ঝকঝকে ও শুদ্ধ লেখা।


৫। আত্মবিশ্বাসী হওয়া ।

"ভাল হতে পারব কি পারব না" এরকম দ্বিধা দ্বন্ধ ও সংশয় মনের মধ্যে বার বার ধাক্কা দিবে । ধাক্কা শামলাতে হবে। দুরু দুরু ভয় ও অযথা শঙ্কা মন থেকে মুছে ফেলতে হবে। " মেহনত করলে মহান স্রস্টা রহমত করে " এই আত্মবিশ্বাস মনে সদা জাগ্রত রাখতে হবে। যারা চেষ্টা করে আল্লাহ তাদের বার্থ করে না বরং সফল করেন এই বিশ্বাসকে দৃঢ়তার সাথে স্বীয় মনে লালন করতে পারলেই তুমি হতে পারবে একজন ভাল ছাত্র ।

" আমি পারবো , আমি A+ পাবো "- যে শিক্ষার্থীর ভিতর এ  আত্মবিশ্বাস ও প্রত্যয় রয়েছে রার সফলতা, তার বিজয় অবশ্যম্ভাবি। যার আত্মবিশ্বাস নেই, পরীক্ষায় তার সফলতা অনিশ্চিত , কেননা তার ভিতর হতাশা, দ্বিধা-সংকোচন  সব সময় কাজ করতে থাকে।

-নিউটন বলেছেন- "আমার আবিস্কারের কারণ আমার প্রতিভা নয়; বহু বছরের পরিশ্রম , নিরবিছিন্ন চিন্তা ও ধৈর্যের ফলেই স্রস্টা আমাকে সার্থক করেছেন ।

-ভলটেয়ার- " প্রতিভা বলে কোন জিনিস নেই । পরিশ্রম কর, সাধনা কর, প্রতিভাকে অগ্রায করতে পারবে" ।

-ভলটানকে লোকে প্রতিভাবান বলত। তিনি তা অস্বীকার করে বলতেন, "পরিশ্রম ছাড়া আমি কিছু জানি না। পরিশ্রম , পর্যবেক্ষণ  ও সহিষ্ণু সাধনার সম্মুখে কিছু অসম্ভব নয়।

-দার্শনিক ইয়ং বলতেন- 'মানুষ যা করে তাই করতে পারে, তাই হতে পারে'। তার জ্বলন্ত প্রমান নিউটন, কারলাইন, জর্জ স্টইফেনশন, ওয়াট, বাফুন, লোকমান হাকিম, ইবনে সিনা, ইবনে খলদুন, আল জাবির, আল্লামা ইকবাল, শেখ সাদি , কাজী নজ্রুল ইসলাম।

সুতরাং ভাল ছাত্র হওয়ার জন্য অধ্যবসায়, আত্মবিশ্বাস , পরিশ্রম ও ধৈর্যের বিকল্প নেই।




 





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

Please validate the captcha